No Comments

AC ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করুন ৫টি দারুণ উপায়ে

AC bill saving tips- Pickaboo

বর্তমানে তীব্র গরমে স্বস্তিদায়ক এবং অতি পরিচিত একটি জনপ্রিয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস হলো AC যা সাধারণত শীতল বাতাস সঞ্চালনে সহায়তা করে। তবে সাধারণভাবে এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল ও শক্তির খরচ নেহাত কম না হওয়ায় এটি বেশ ব্যয়বহুল। 

তবে কয়েকটি বিশেষ দিকের প্রতি খেয়াল রাখলে এবং কিছু টিপস ব্যবহার করলে অতিরিক্ত এসি ব্যবহারের পরেও আপনারা বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করতে পারবেন। আজকের পিকাবু ব্লগে আমরা আপনাদের সাথে AC ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ে ৫টি দারুন টিপস নিয়ে আলোচনা করব।

১.সেটিংস অপটিমাইজ করুন

এসি ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ের একটি অন্যতম টিপস হলো এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এর সেটিংস অপটিমাইজ করা। সাধারণত ঘরের তাপমাত্রা শীতল করার জন্য এসির তাপমাত্রার সেটিংস ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে হলে ভালো হয়। কম তাপমাত্রায় এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রতিটি ডিগ্রী শক্তির খরচ ৩% থেকে ৫% পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে। 

আপনার সময়সূচী এবং ঘরের পরিবেশের উপর ভিত্তি করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাপমাত্রার সামঞ্জস্য করতে একটি প্রোগ্রামেবল থার্মোস্ট্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে। এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা যত কম হবে তত বেশি খরচ বাড়বে অপরদিকে তাপমাত্রা যত বৃদ্ধি পাবে তত বেশি বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হবে। তাই এসি ব্যবহার করেও বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করতে হলে অবশ্যই এর সেটিংস অপটিমাইজ করতে হবে।

২. ফ্যান ব্যবহার করুন

এসি ব্যবহারে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করতে এসির সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি পোর্টেবল ফ্যান ব্যবহার করা যেতে পারে। আপনার এসির সাথে সামঞ্জস্য রেখে একটি পোর্টেবল ফ্যান বা সিলিং ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন যা শক্তির খরচ কমিয়ে শীতল বাতাস সঞ্চালনে সহায়তা করে। এতে করে এসির তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিলেও কম বিদ্যুৎ খরচে অধিক শীতল বাতাস পাওয়া যায়। 

এ ধরনের পোর্টেবল ফ্যান ব্যবহার করার ফলে এসিকে উচ্চ তাপমাত্রায় রেখে ব্যবহার করা যায় যার ফলে শক্তির খরচ উল্লেখ্যযোগ্য ভাবে হ্রাস পায় এবং একই সাথে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করা সম্ভব হয়। তবে এই ধরনের ফ্যান ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই এটি আপনার এসির সাথে মিলছে কিনা বা সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আর তাই বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয়ে এসির পাশাপাশি একটি ফ্যান ব্যবহার করতে পারেন।

৩. Energy-saving mode ব্যবহার করুন

এই গরমে এসি ব্যবহার করে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করার জন্য এসির energy saving mode বা শক্তি সাশ্রয়ী বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আজকাল বাজারে নানা ধরনের নানা কোম্পানির এসি পাওয়া যায় এবং এদের বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যেও বেশ ভিন্নতা দেখা যায়। এসির বিভিন্ন ধরনের শক্তিশালী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন energy saving mode, sleeping mode, timer function ইত্যাদি। আপনার প্রয়োজন এবং ব্যবহারের ধরনের উপর ভিত্তি করে আপনারা এই ধরনের শক্তি সাশ্রয়ী বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহার করতে পারেন যা এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল ও শক্তির খরচ অনেকাংশে হ্রাস করবে। 

এই বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবহারে সাধারণত উচ্চ তাপমাত্রায় বিদ্যুৎ ও শক্তির খরচ কমিয়ে এসি থেকে অধিক শীতল বাতাস পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে এসি কেনার সময় আপনার প্রয়োজন অনুসারে এ ধরনের শক্তি সাশ্রয়ী বৈশিষ্ট্যগুলো বিবেচনায় রাখতে পারেন। সুতরাং গরমে এসির ব্যবহার বৃদ্ধি পেলেও যাতে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হয় সেজন্য আপনারা এসির energy saving mode ব্যবহার করতে পারেন।

৪. ঘরের তাপমাত্রা হ্রাস করুন

এসি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করার জন্য একটি অন্যতম উপায় হলো যথাসম্ভব বাড়ি ঘরের তাপমাত্রা হ্রাস করে ঘরের পরিবেশকে শীতল করা। দিনের উষ্ণতম সময়গুলোতে ঘরে সূর্যালোকের এক্সপোজার বা চলাচল কমিয়ে ঘরের অতিরিক্ত তাপ হ্রাস করা সম্ভব। ঘরে সরাসরি সূর্যালোকের চলাচল আটকাতে জানালায় পর্দা, শেড বা চাদর ব্যবহার করতে পারেন। জানালা এবং দরজার আশেপাশে কোনো ফাঁকা বা ফাটল থাকলে তা বন্ধ করার জন্য ভারী কাপড় ব্যবহার করতে পারেন যাতে করে বাইরের উষ্ণ বাতাস ঘরে প্রবেশ করতে না পারে এবং ঘরের শীতল বাতাস বাইরে যেতে না পারে। 

এতে করে আপনার বাড়ি ঘরের তাপ হ্রাস পেয়ে তাপমাত্রা কিছুটা স্বাভাবিক হবে এবং অতিরিক্ত এসির ব্যবহারও হ্রাস পাবে। ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা শীতল থাকলে এসি ব্যবহারের প্রয়োজন পড়বে না এতে করে আপনারা বেশ খানিকটা বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করতে পারবেন। এভাবেই ঘরের তাপমাত্রা হ্রাস বা শীতল করে অতিরিক্ত এসির ব্যবহার কমিয়ে এই গরমেও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।

৫. নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার করুন

আপনার এসির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে এবং বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করে এসি ব্যবহার করতে হলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত এসি রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিষ্কার করতে হবে। এসির বায়ুপ্রবাহ এবং শক্তির দক্ষতা উন্নত করতে নিয়মিত অর্থাৎ অন্তত ১ থেকে ৩ মাস পর পর এসির বাতাসের ফিল্টারগুলো প্রতিস্থাপন বা পরিষ্কার করতে হবে। নিয়মিত এসির ইউনিট ও কনডেন্সার কয়েল গুলো পরিষ্কার করে নিশ্চিত করতে হবে যে এসির ভেন্টিলেশন বা বাতাস চলাচলের নলগুলো বাধাহীন আছে। 

এসির পাওয়ার সেভিং মুডগুলো ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই প্রথমে এর ম্যানুয়াল বইটি পড়ে নিতে হবে এবং সঠিকভাবে এসি ব্যবহার করতে হবে। এসি সঠিকভাবে পরিষ্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ না করলে এর কার্যক্ষমতা ও শীতল বাতাস সঞ্চালন হ্রাস পাবে। এতে করে এসি থেকে শীতল বাতাস কম বের হবে এবং অধিক বিদ্যুৎ শক্তি খরচ হবে। তাই বিদ্যুৎ শক্তির খরচ কমাতে এবং বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় করতে অবশ্যই আপনার এসিকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিষ্কার করার ব্যাপারটি নিশ্চিত করতে হবে।

আশা করছি উপরের টিপস গুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করলে এই তীব্র গরমেও আপনারা এসির ব্যবহার কমিয়ে শক্তির খরচ ও বিদ্যুৎ বিল অনেকটাই সাশ্রয় করতে পারবেন।

শেষ কথা

বর্তমানে এসি খুবই জনপ্রিয় একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা তীব্র গরমের হাত থেকে মানুষকে স্বস্তি দিতে সাহায্য করছে। এসি ব্যবহার করে শীতল বাতাসে আরাম উপভোগ করার সময় কার্যকর ভাবে শক্তির খরচ ও বিদ্যুৎ বিল কমাতে আপনারা উপরোক্ত টিপসগুলো অনুসরণ করতে পারেন। তবে এটি শুধুমাত্র আপনার বিদ্যুৎ বিল বাঁচাতে সাহায্য করে না বরং বিভিন্ন ক্ষতিকর গ্যাসের প্রভাব কমিয়ে পরিবেশের স্বাভাবিক ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে। ধন্যবাদ পিকাবুর সাথে থাকার জন্য। 

Tags: , , ,

More Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Fill out this field
Fill out this field
Please enter a valid email address.
You need to agree with the terms to proceed